16-10-16 AVYAKT-BAPDADA PRABHU MILAN
১৬-১০-১৬ ওম্ শান্তি "অব্যক্ত-বাপদাদা" মধুবন
"ওম্ শান্তি শব্দের অর্থ স্বরূপে স্থিত হয়ে মনের ডান্সকে বাড়াও, মনের মৌনতার অভ্যাস করো, তবেই আওয়াজের থেকে দূরে যেতে থাকবে এবং শান্তির কিরণের দ্বারা সেবারও স্বতঃতই বৃদ্ধি হতে থাকবে"
ওম্ শান্তি। এই মহাবাক্য সকলের কত প্রিয়। যা কিছুই ঘটে যাক না কেন, ওম্ শান্তি শব্দটি তা সে ক্রন্দনের বায়ুমন্ডলই হোক না কেন ওম্ শান্তি শব্দ আমাদেরকে শান্তি-কে স্মরণ করিয়ে দেয়। ওম্ শান্তি বলার সাথে সাথেই যেমন দৃশ্যই সামনে থাকুক না কেন ওম্ শান্তির অর্থ তার নিজস্ব রূপ দেখিয়ে দেয়। ওম্ শান্তি বলা মাত্রই মনের মধ্যে শান্তির ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। সকলের হৃদয়ে ওম্ শান্তি নিজস্ব অর্থ ফুটিয়ে তোলে। 'বাবা' শব্দটি যেমন তার নিজস্ব অর্থকে পরিস্ফুট করে, তেমনি ওম্ শান্তির শব্দের দ্বারা সেটি তার নিজস্ব অর্থই হৃদয়ে ছড়িয়ে দেয়। হৃদয়ের অভ্যন্তরে তো ছড়ায়-ই, কিন্তু ছড়ানোর সাথে সাথে সেই অর্থ স্বরূপে স্থিত হয়ে যায়। কেবল মুখেই বলে না বরং যদি চারিদিকে তাকাও তাহলে দেখবে যে ওম্ শান্তির অর্থ স্বরূপে অধিকাংশ বাচ্চাই স্থিত হয়ে রয়েছে। অধিকাংশেরই রূপ চকমক করছে। একে অপরকে দেখে, অন্যদের সঙ্গের রঙ চকমক করছে। সেইজন্য বাপদাদাও ওম্ শান্তি-কেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তোমাদের সকলের হৃদয়ে নিশ্চয়ই এর অর্থ পরিষ্কার হয়ে গেছে ! প্রত্যেককে ওম্ শান্তির অর্থ স্বরূপে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কেউ মুখে বলছে, কেউ দেখছে ওম্ শান্তি।
এখনও সকলে এই মুহূর্তে ওম্ শান্তির অর্থ স্বরূপে গভীর ভাবে এর অর্থ স্বরূপে মগন রয়েছে। তো বাবাও বলেন এই ওম্ শান্তি-র অর্থে টিকে থাকার ফলে সকলের চেহারা অধিকাংশেরই ওম্ শান্তির অর্থে মগন হয়ে রয়েছে। সামনে বা পিছনে যারাই বসে রয়েছে, তোমাদের হাত আর কি তোলাবো ! অধিকাংশই এর অর্থ স্বরূপে ডুবে রয়েছে। সকলের মুখ থেকে ওম্ শান্তি-ই বেরোচ্ছে। সকলের হৃদয়ে ওম্ শান্তি শব্দটি মিশে রয়েছে। সকলের মনে এর অর্থ ইমার্জ রয়েছে। সকলে সেই ওম্ শান্তি অর্থে মনের ডান্স করছে। পা দিয়ে ডান্স হয়তো করছে না। কিন্তু মনের ডান্স অধিকাংশরাই করছে আর এই মনের ডান্স কত সুন্দর দেখ ! কাউকেই বিরক্ত করে না। প্রত্যেকের মধ্যে মনের শান্তি থাকার কারণে বাইরেও তারা খুব শান্ত, তাদের মনও খুব শান্ত। এমন ডবল ওম্ শান্তি, বহির্মুখেও তারা ওম্ শান্তি আর মনের মধ্যেও তাদের ওম্ শান্তি। এও তো হল এক প্রকারের ডান্স। এ হল মনের ডান্স। শান্তিতে বসে তোমরা কত সুন্দর ডান্স করছো। কিন্তু মনের ডান্স হওয়ার কারণে বাইরে তার আওয়াজ নেই। প্রত্যেকে নিজের মনের ডান্সে ব্যস্ত রয়েছে, সেইজন্য মনের আওয়াজ রয়েছে, মুখের কোনো আওয়াজ নেই। এত লোক থাকা সত্ত্বেও খুব কাছে কেউ এলে তবেই তা শুনতে পাবে। কেননা মনের ডান্স মনই জানে। আর এই মনের ডান্সকে এত ব্যস্ত হয়ে রয়েছে যে যেখানেই বসে থাকুক না কেন মন কিন্তু শান্ত। মনের মস্তিতে মগ্ন রয়েছে বলে এই মনের ডান্সে বাইরে কোনো আওয়াজ করে না, বরং এই মনের ডান্স মনে এত প্রকারের রঙ দেখায়, যা বড়ই সুন্দর। এই মনের ডান্স যখনই হয় তাতে কিন্তু বাইরে থেকে কোনো আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় না। এত লোক বসে রয়েছে, কিন্তু কোনো আওয়াজ নেই। কেননা মনের ডান্সে সকলে ব্যস্ত রয়েছে। এই ডান্স ভালো লাগে তো ! বাইরের ডান্স তো অনেক দেখেছ, কিন্তু মনের ডান্স দেখ কত রমণীয় ! এই ডান্সকেই বেশী করে বাড়াও। মনের ডান্স কি তা জান তো ? জানো ? যারা জান তারা হাত তোলো। আচ্ছা, সকলেই জানে ! সুন্দর হাতও তুলেছে। তো এখন এই মনের ডান্সে এবার এগিয়ে যাও। এই মনের ডান্স ভালো লাগে, নাকি মুখের ডান্স ? এখন মনের ডান্সের অভ্যাস তৈরী করো। এতেই ব্যস্ত থাকলে, মনের ডান্স করবার সময় এখানে এই হলও (Diamond Hall) কত শান্ত হয়ে যায়। তবে এই ডান্স এখন বেশী প্রয়োজন। কেননা দিনদিন বাইরে গন্ডগোল বাড়তেই থাকবে, বাড়তেই হবে। সেই সময় বাইরের ডান্স বা বাইরের আওয়াজে আসা, সেটাও ভালো, তবে তার জন্য মনের ডান্সের অনেক বেশী প্র্যাকটিস প্রয়োজন। ভিতরে ভিতরে এর অনেক বেশী প্র্যাকটিস দরকার। সারাদিনে এর জন্য সময় আগে বের করো। প্রত্যেকে সারাদিনে এই দুই প্রকারের ডান্সের জন্য সময় বের করো এবং তার প্র্যাকটিস করো। যত বেশী এই ডান্স করতে থাকবে, এই ডান্সের দ্বারা মনের প্রভাব, মুখের ডান্সেও পড়তে থাকবে(বাচা সেবা)। তাই এখন মনের ডান্সকে বাড়াও। তাহলে আগ্রহ আরো বেশী বাড়তে থাকবে। এখন বাবা দেখলেন, তাতে অনেকেরই মনের ডান্সের আগ্রহ বেড়ে যাবে আর চারিদিকে তার ফলে সত্যিকারের শান্তির অনুভব হচ্ছে। অনেকেরই অনুভব এর ফলে আরও বেড়ে গেল। এই অভ্যাস বৃদ্ধি পেলে তা অনেক কাজে লাগবে। বাইরে যে মৌনতার প্রোগ্রাম তোমরা বানিয়ে থাকো তাতেও মনের শান্তি বাড়ে, আর মনের শান্তি বাড়লে অটোমেটিক্যালি মুখের বোল-ও কমে যাবে। তাই প্রত্যেককে এখন এই মুহূর্তে কি অ্যাটেনশান দিতে হবে ? মনের মৌনের ওপরে। মনের মৌনতা, মনের মৌনতা কি তা তোমরা জানো তো ? নাকি এটাও জান না ! এই বিষয়ে আগ্রহ বাড়াও, তবেই মনের মৌন বাড়তে থাকবে। মনের মৌন বাড়লে তনের মৌন স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে তোমরা নিজেদের মধ্যে মনের মৌনতাকে বাড়ানোর পুরুষার্থ ভালোবাসার সাথে এগিয়ে নিয়ে চলো। এ বিষয়ে যত বেশী প্রচেষ্টা থাকবে ততই আগ্রহ বাড়বে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মনের মৌনতা থাকার ফলে আওয়াজের থেকে অনেক দূরে যেতে থাকবে। আর তার ফলে মনের মধ্যে শান্তির কিরণ বৃদ্ধি পেতে থাকবে। *তো এখন থেকে এক সপ্তাহ বিশেষ মনের শান্তির এই এক সপ্তাহ পালন করো। মুখের শান্তিকে কমাও, মনের শান্তিকে বাড়াও। তো ট্রায়াল করো, তাহলে মনের শান্তির দ্বারা সব রকমের শান্তি বাড়তে থাকবে। *এখন এক মাস মনের শক্তিকে বাড়াতে হবে। মনের শক্তি বাড়লে অটোমেটিক্যালি মুখের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এই প্র্যাক্টিস সবারই ভালো লাগে কি ! ভালো লাগলে হাত তোলো। আচ্ছা, হাত তো অধিকাংশই তুলেছে ।
এই মনের শান্তি কি ? আর একে কিভাবেই বা বাড়াতে হবে - এও নিজের মনে মনে অভ্যাস করতে থাকো। আর এই মনের শান্তির পাঠটিকে বাড়াতে থাকো। মনের শান্তি যত বাড়তে থাকবে তার প্রভাব মুখের শান্তির ওপরেও পড়বে। আর যত বেশী মনের শান্তি বাড়বে ততই বাইরের দিকের যে মুখের শক্তি তা কম হতে থাকবে। আজকাল এ বিষয়ে খুব ভালো প্রতিযোগিতা (race) চলছিল, সকলেরই মনের শক্তি বেড়ে গিয়েছিল, তা সে মনের চিন্তনই হোক মুখের দ্বারাই হোক বা সূক্ষ্ম শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার অভ্যাসের দ্বারাই হোক। যত বেশী বাড়াতে তত বেশী শক্তি বৃদ্ধি পেতে পেতে মুখের শক্তি কম হয়ে যাবে। তো কথার মধ্যে যে মাঝে মাঝে এদিক ওদিক ঘটে যায় বা বাচার জন্য যে পুরুষার্থ করা হয়, দেখা গেছে যে তা কম হয়ে গেছে। তাই সেটাই করতে থাকো, বাপদাদা এটাই বলতে চান।
সেবার টার্ন, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের, টোটাল ২২ হাজার এসেছে :- এমনিতে টোটালি যে বিষয়ের ওপরে চলেছিল, তা হল সেবা এবং বাবাকে স্মরণ। এই দুটি বিষয়ের উপরে। এখন সেবাতেও বাড়াতে হবে। তোমরা কি মনে করো, সেবাকে বাড়ানো হবে কি ? হাত তোলো। সেবায় জরুরী। সেবা না করলে সময় এদিকে ওদিকে নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা টাইম তো পাস করতেই হবে আর ভালো ভাবে সেটা করতে হবে। যা পেলাম তাই করলাম, না তা করলে হবে না। নিয়ম মেনে প্রোগ্রাম যেমন যেমন দেওয়া হবে, আর সেই মতো রেজাল্টও আসতে হবে।
রমেশ ভাই-এর শরীর খারাপ, তাই ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, বাপদাদা ওনার সাথে দেখা করছেন, রমেশ ভাই বাপদাদাকে নতুন বই উদ্বোধনের জন্য দিলেন : - ওম্ শান্তি। সার্ভিস তো হচ্ছেই, আর জরুরীও সেটা। সার্ভিস না থাকলে তোমরা তো ফ্রি হয়ে যাবে, আর ফ্রি হয়ে গেলে তোমাদের মনে আরো অনেক বেশী সংকল্প চলতে থাকবে যে কিছু করতে হবে। তাই এখন যে পরিকল্পনা করা রয়েছে, বাপদাদা চাইছেন সেগুলি আগে সম্পূর্ণ করো। নইলে এভাবে শুরু করলে কিছু সময় পরে তার উদ্দীপনা নষ্ট হয়ে যাবে।
বেশ ভালো। রমেশ ভাই আপনার চিন্তা ভাবনা বেশ ভালো, কিন্তু এই বিষয়ের ওপরে কাজ করবার সময় কিছু বিষয়ের ওপরে বিশেষ নজর দিতে হবে। নিজেদের মধ্যে বসে এ বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করো-- কীভাবে করবে, কি করে বাড়ানো যাবে। অতিরিক্ত কিছুও যেন না হয়ে যায় আবার কমও না হয়ে যায়। মাঝামাঝি যেন থাকে দু'দিকই। সেইজন্য আগে একটা ছোট মিটিং করো, তাতে আইডিয়া বানাও যে কি কি করতে হবে, কি কি হবে না। এক একজন এক এক রকম মত দেবে, তাই প্ল্যান বানাও, কেননা সব বিষয়ের সার্ভিস বেড়েছে না বাড়েনি, তা সকলেই জানতে পেরে যাবে।
ডবল বিদেশী ৭৫ টি দেশ থেকে ৯০০ জন এসেছে : - (বাপদাদার কাছে সেবার প্ল্যান পাঠিয়েছে, বাপদাদা তার উপরে মহাবাক্য উচ্চারণ করছেন) এনার সার্ভিসের প্ল্যানটি বেশ ভালো। সার্ভিসে যত অগ্রসর হবে ততই অন্যান্য বিষয়েও এগিয়ে যাবে। ওই বিষয়েটির ওপরে আগে প্ল্যান বানাও, তারপর ফাইনাল করবো। প্রথমে যিনি সার্ভিসের প্ল্যান বানিয়েছেন তারটা আগে শোনো, তারপর তাকে ফাইনাল করা গেলে করো, আর যদি সংযোজন করতে হয়, তবে তারও রূপরেখা বানাও, তারপর সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করে সার্ভিসেরও বানাও এবং যোগেরও। এই দুটি ঠিকই জরুরী। সেসব বানিয়ে তবে প্ল্যানটির বিষয়ে ফাইনাল করো যে তাতে কি করা হবে আর কি করা হবে না। যারা মনে করে যে এই সেবাটি জরুরী তারা প্ল্যান বানিয়ে আগে তাকে পাস করাও তারপর বাকিটা আউট করো।
(দাদীরা বাপদাদার সাথে মিলিত হতে এসেছেন)
বাবা তোমার তো প্রথম সার্ভিসও তোমারই। কেননা বাবার তো শখ-ই হল সেবা। সেবার দিকেই আগে অ্যাটেনশান যায়। সেইজন্য সেবার করতে হবে আর তার সাথে সাথে এই যে সব সেবা রয়েছে, সেসবও বাড়াতে হবে। বাবা একদিকে বলেন বাড়াও, অন্যদিকে বলেন এত বাড়িয়ে ফেলো না যে সামলাতে না পারো। আগে সিস্টেমটাকে ঠিক করো। সিস্টেম ঠিক হয়ে গেলে পরে অটোমেটিক্যালি সব বিভাগই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এটা যেন খেয়াল থাকে যে এক একটি ডিপার্টমেন্টের কোনটা রাখতে হবে আর কোনটা বাদ দিতে হবে বা কাট করতে হবে। সেটাও আগে ফাইনাল করতে হবে।
বিদেশের বড় দিদিদের সাথে : - সকলেই এসেছেন। তো সকলেই একসাথে বসে আছেন। আপনারা আপনাদের প্ল্যান বানিয়েছেন ? (এখন বানাবো) আগে প্ল্যান বানাও তারপর বাপদাদা দেখবেন যেখানে কি করা যেতে পারে। আর এই সেবাকাজে যে যত সময় দিয়েছেন, ততটাই সময়ও বের করতে হবে। কেননা সেসব রিপিট তো করতে হবে ! তাতেও বেশী করে এটাই লক্ষ্য রাখো যে যেগুলি প্রধান, সেগুলি আগে উল্লেখ করে দাও তাহলে রিপিটেশন হবে না। যেসব সার্ভিসেবল বাচ্চারা, যারা সার্ভিসের বিষয় চিন্তা ভাবনা করে, তারা এসেছেও সার্ভিসের প্ল্যানের জন্য। তো যত বেশী সার্ভিসের ওপরে অ্যাটেনশান দেবে ততই সার্ভিসের লাভ নিতে পারবে। নিজেদের মধ্যে বসে নবীনত্ব আনো। আর যা সব কিছু হচ্ছে সেগুলিকে ঠিক করো আর নবীনত্ব আনো।
জার্মানিতে রিট্রিস সেন্টার হবে, সুদেশ দিদি তার নকশা বাপদাদাকে দেখাচ্ছেন : - সবাই আগে দেখো তারপর ফাইনাল করো।
(নিউইয়র্কের মোহিনী দিদি সকলের স্মরণ আর ভালোবাসা জানালেন, মোহিনী দিদি ৭৫ বছর পূর্ণ হবে, বাপদাদা ওনাকে মালা পরিয়ে দিলেন।)
ব্যাঙ্গালোরের সরলা দিদি(অনেক পুরোনো দিদি) বাপদাদাকে পুষ্প স্তবক দিলেন : - শরীর ঠিক আছে। খুব ভালো।
১৬-১০-১৬ ওম্ শান্তি "অব্যক্ত-বাপদাদা" মধুবন
"ওম্ শান্তি শব্দের অর্থ স্বরূপে স্থিত হয়ে মনের ডান্সকে বাড়াও, মনের মৌনতার অভ্যাস করো, তবেই আওয়াজের থেকে দূরে যেতে থাকবে এবং শান্তির কিরণের দ্বারা সেবারও স্বতঃতই বৃদ্ধি হতে থাকবে"
ওম্ শান্তি। এই মহাবাক্য সকলের কত প্রিয়। যা কিছুই ঘটে যাক না কেন, ওম্ শান্তি শব্দটি তা সে ক্রন্দনের বায়ুমন্ডলই হোক না কেন ওম্ শান্তি শব্দ আমাদেরকে শান্তি-কে স্মরণ করিয়ে দেয়। ওম্ শান্তি বলার সাথে সাথেই যেমন দৃশ্যই সামনে থাকুক না কেন ওম্ শান্তির অর্থ তার নিজস্ব রূপ দেখিয়ে দেয়। ওম্ শান্তি বলা মাত্রই মনের মধ্যে শান্তির ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। সকলের হৃদয়ে ওম্ শান্তি নিজস্ব অর্থ ফুটিয়ে তোলে। 'বাবা' শব্দটি যেমন তার নিজস্ব অর্থকে পরিস্ফুট করে, তেমনি ওম্ শান্তির শব্দের দ্বারা সেটি তার নিজস্ব অর্থই হৃদয়ে ছড়িয়ে দেয়। হৃদয়ের অভ্যন্তরে তো ছড়ায়-ই, কিন্তু ছড়ানোর সাথে সাথে সেই অর্থ স্বরূপে স্থিত হয়ে যায়। কেবল মুখেই বলে না বরং যদি চারিদিকে তাকাও তাহলে দেখবে যে ওম্ শান্তির অর্থ স্বরূপে অধিকাংশ বাচ্চাই স্থিত হয়ে রয়েছে। অধিকাংশেরই রূপ চকমক করছে। একে অপরকে দেখে, অন্যদের সঙ্গের রঙ চকমক করছে। সেইজন্য বাপদাদাও ওম্ শান্তি-কেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তোমাদের সকলের হৃদয়ে নিশ্চয়ই এর অর্থ পরিষ্কার হয়ে গেছে ! প্রত্যেককে ওম্ শান্তির অর্থ স্বরূপে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কেউ মুখে বলছে, কেউ দেখছে ওম্ শান্তি।
এখনও সকলে এই মুহূর্তে ওম্ শান্তির অর্থ স্বরূপে গভীর ভাবে এর অর্থ স্বরূপে মগন রয়েছে। তো বাবাও বলেন এই ওম্ শান্তি-র অর্থে টিকে থাকার ফলে সকলের চেহারা অধিকাংশেরই ওম্ শান্তির অর্থে মগন হয়ে রয়েছে। সামনে বা পিছনে যারাই বসে রয়েছে, তোমাদের হাত আর কি তোলাবো ! অধিকাংশই এর অর্থ স্বরূপে ডুবে রয়েছে। সকলের মুখ থেকে ওম্ শান্তি-ই বেরোচ্ছে। সকলের হৃদয়ে ওম্ শান্তি শব্দটি মিশে রয়েছে। সকলের মনে এর অর্থ ইমার্জ রয়েছে। সকলে সেই ওম্ শান্তি অর্থে মনের ডান্স করছে। পা দিয়ে ডান্স হয়তো করছে না। কিন্তু মনের ডান্স অধিকাংশরাই করছে আর এই মনের ডান্স কত সুন্দর দেখ ! কাউকেই বিরক্ত করে না। প্রত্যেকের মধ্যে মনের শান্তি থাকার কারণে বাইরেও তারা খুব শান্ত, তাদের মনও খুব শান্ত। এমন ডবল ওম্ শান্তি, বহির্মুখেও তারা ওম্ শান্তি আর মনের মধ্যেও তাদের ওম্ শান্তি। এও তো হল এক প্রকারের ডান্স। এ হল মনের ডান্স। শান্তিতে বসে তোমরা কত সুন্দর ডান্স করছো। কিন্তু মনের ডান্স হওয়ার কারণে বাইরে তার আওয়াজ নেই। প্রত্যেকে নিজের মনের ডান্সে ব্যস্ত রয়েছে, সেইজন্য মনের আওয়াজ রয়েছে, মুখের কোনো আওয়াজ নেই। এত লোক থাকা সত্ত্বেও খুব কাছে কেউ এলে তবেই তা শুনতে পাবে। কেননা মনের ডান্স মনই জানে। আর এই মনের ডান্সকে এত ব্যস্ত হয়ে রয়েছে যে যেখানেই বসে থাকুক না কেন মন কিন্তু শান্ত। মনের মস্তিতে মগ্ন রয়েছে বলে এই মনের ডান্সে বাইরে কোনো আওয়াজ করে না, বরং এই মনের ডান্স মনে এত প্রকারের রঙ দেখায়, যা বড়ই সুন্দর। এই মনের ডান্স যখনই হয় তাতে কিন্তু বাইরে থেকে কোনো আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় না। এত লোক বসে রয়েছে, কিন্তু কোনো আওয়াজ নেই। কেননা মনের ডান্সে সকলে ব্যস্ত রয়েছে। এই ডান্স ভালো লাগে তো ! বাইরের ডান্স তো অনেক দেখেছ, কিন্তু মনের ডান্স দেখ কত রমণীয় ! এই ডান্সকেই বেশী করে বাড়াও। মনের ডান্স কি তা জান তো ? জানো ? যারা জান তারা হাত তোলো। আচ্ছা, সকলেই জানে ! সুন্দর হাতও তুলেছে। তো এখন এই মনের ডান্সে এবার এগিয়ে যাও। এই মনের ডান্স ভালো লাগে, নাকি মুখের ডান্স ? এখন মনের ডান্সের অভ্যাস তৈরী করো। এতেই ব্যস্ত থাকলে, মনের ডান্স করবার সময় এখানে এই হলও (Diamond Hall) কত শান্ত হয়ে যায়। তবে এই ডান্স এখন বেশী প্রয়োজন। কেননা দিনদিন বাইরে গন্ডগোল বাড়তেই থাকবে, বাড়তেই হবে। সেই সময় বাইরের ডান্স বা বাইরের আওয়াজে আসা, সেটাও ভালো, তবে তার জন্য মনের ডান্সের অনেক বেশী প্র্যাকটিস প্রয়োজন। ভিতরে ভিতরে এর অনেক বেশী প্র্যাকটিস দরকার। সারাদিনে এর জন্য সময় আগে বের করো। প্রত্যেকে সারাদিনে এই দুই প্রকারের ডান্সের জন্য সময় বের করো এবং তার প্র্যাকটিস করো। যত বেশী এই ডান্স করতে থাকবে, এই ডান্সের দ্বারা মনের প্রভাব, মুখের ডান্সেও পড়তে থাকবে(বাচা সেবা)। তাই এখন মনের ডান্সকে বাড়াও। তাহলে আগ্রহ আরো বেশী বাড়তে থাকবে। এখন বাবা দেখলেন, তাতে অনেকেরই মনের ডান্সের আগ্রহ বেড়ে যাবে আর চারিদিকে তার ফলে সত্যিকারের শান্তির অনুভব হচ্ছে। অনেকেরই অনুভব এর ফলে আরও বেড়ে গেল। এই অভ্যাস বৃদ্ধি পেলে তা অনেক কাজে লাগবে। বাইরে যে মৌনতার প্রোগ্রাম তোমরা বানিয়ে থাকো তাতেও মনের শান্তি বাড়ে, আর মনের শান্তি বাড়লে অটোমেটিক্যালি মুখের বোল-ও কমে যাবে। তাই প্রত্যেককে এখন এই মুহূর্তে কি অ্যাটেনশান দিতে হবে ? মনের মৌনের ওপরে। মনের মৌনতা, মনের মৌনতা কি তা তোমরা জানো তো ? নাকি এটাও জান না ! এই বিষয়ে আগ্রহ বাড়াও, তবেই মনের মৌন বাড়তে থাকবে। মনের মৌন বাড়লে তনের মৌন স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে তোমরা নিজেদের মধ্যে মনের মৌনতাকে বাড়ানোর পুরুষার্থ ভালোবাসার সাথে এগিয়ে নিয়ে চলো। এ বিষয়ে যত বেশী প্রচেষ্টা থাকবে ততই আগ্রহ বাড়বে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মনের মৌনতা থাকার ফলে আওয়াজের থেকে অনেক দূরে যেতে থাকবে। আর তার ফলে মনের মধ্যে শান্তির কিরণ বৃদ্ধি পেতে থাকবে। *তো এখন থেকে এক সপ্তাহ বিশেষ মনের শান্তির এই এক সপ্তাহ পালন করো। মুখের শান্তিকে কমাও, মনের শান্তিকে বাড়াও। তো ট্রায়াল করো, তাহলে মনের শান্তির দ্বারা সব রকমের শান্তি বাড়তে থাকবে। *এখন এক মাস মনের শক্তিকে বাড়াতে হবে। মনের শক্তি বাড়লে অটোমেটিক্যালি মুখের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এই প্র্যাক্টিস সবারই ভালো লাগে কি ! ভালো লাগলে হাত তোলো। আচ্ছা, হাত তো অধিকাংশই তুলেছে ।
এই মনের শান্তি কি ? আর একে কিভাবেই বা বাড়াতে হবে - এও নিজের মনে মনে অভ্যাস করতে থাকো। আর এই মনের শান্তির পাঠটিকে বাড়াতে থাকো। মনের শান্তি যত বাড়তে থাকবে তার প্রভাব মুখের শান্তির ওপরেও পড়বে। আর যত বেশী মনের শান্তি বাড়বে ততই বাইরের দিকের যে মুখের শক্তি তা কম হতে থাকবে। আজকাল এ বিষয়ে খুব ভালো প্রতিযোগিতা (race) চলছিল, সকলেরই মনের শক্তি বেড়ে গিয়েছিল, তা সে মনের চিন্তনই হোক মুখের দ্বারাই হোক বা সূক্ষ্ম শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার অভ্যাসের দ্বারাই হোক। যত বেশী বাড়াতে তত বেশী শক্তি বৃদ্ধি পেতে পেতে মুখের শক্তি কম হয়ে যাবে। তো কথার মধ্যে যে মাঝে মাঝে এদিক ওদিক ঘটে যায় বা বাচার জন্য যে পুরুষার্থ করা হয়, দেখা গেছে যে তা কম হয়ে গেছে। তাই সেটাই করতে থাকো, বাপদাদা এটাই বলতে চান।
সেবার টার্ন, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের, টোটাল ২২ হাজার এসেছে :- এমনিতে টোটালি যে বিষয়ের ওপরে চলেছিল, তা হল সেবা এবং বাবাকে স্মরণ। এই দুটি বিষয়ের উপরে। এখন সেবাতেও বাড়াতে হবে। তোমরা কি মনে করো, সেবাকে বাড়ানো হবে কি ? হাত তোলো। সেবায় জরুরী। সেবা না করলে সময় এদিকে ওদিকে নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা টাইম তো পাস করতেই হবে আর ভালো ভাবে সেটা করতে হবে। যা পেলাম তাই করলাম, না তা করলে হবে না। নিয়ম মেনে প্রোগ্রাম যেমন যেমন দেওয়া হবে, আর সেই মতো রেজাল্টও আসতে হবে।
রমেশ ভাই-এর শরীর খারাপ, তাই ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, বাপদাদা ওনার সাথে দেখা করছেন, রমেশ ভাই বাপদাদাকে নতুন বই উদ্বোধনের জন্য দিলেন : - ওম্ শান্তি। সার্ভিস তো হচ্ছেই, আর জরুরীও সেটা। সার্ভিস না থাকলে তোমরা তো ফ্রি হয়ে যাবে, আর ফ্রি হয়ে গেলে তোমাদের মনে আরো অনেক বেশী সংকল্প চলতে থাকবে যে কিছু করতে হবে। তাই এখন যে পরিকল্পনা করা রয়েছে, বাপদাদা চাইছেন সেগুলি আগে সম্পূর্ণ করো। নইলে এভাবে শুরু করলে কিছু সময় পরে তার উদ্দীপনা নষ্ট হয়ে যাবে।
বেশ ভালো। রমেশ ভাই আপনার চিন্তা ভাবনা বেশ ভালো, কিন্তু এই বিষয়ের ওপরে কাজ করবার সময় কিছু বিষয়ের ওপরে বিশেষ নজর দিতে হবে। নিজেদের মধ্যে বসে এ বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করো-- কীভাবে করবে, কি করে বাড়ানো যাবে। অতিরিক্ত কিছুও যেন না হয়ে যায় আবার কমও না হয়ে যায়। মাঝামাঝি যেন থাকে দু'দিকই। সেইজন্য আগে একটা ছোট মিটিং করো, তাতে আইডিয়া বানাও যে কি কি করতে হবে, কি কি হবে না। এক একজন এক এক রকম মত দেবে, তাই প্ল্যান বানাও, কেননা সব বিষয়ের সার্ভিস বেড়েছে না বাড়েনি, তা সকলেই জানতে পেরে যাবে।
ডবল বিদেশী ৭৫ টি দেশ থেকে ৯০০ জন এসেছে : - (বাপদাদার কাছে সেবার প্ল্যান পাঠিয়েছে, বাপদাদা তার উপরে মহাবাক্য উচ্চারণ করছেন) এনার সার্ভিসের প্ল্যানটি বেশ ভালো। সার্ভিসে যত অগ্রসর হবে ততই অন্যান্য বিষয়েও এগিয়ে যাবে। ওই বিষয়েটির ওপরে আগে প্ল্যান বানাও, তারপর ফাইনাল করবো। প্রথমে যিনি সার্ভিসের প্ল্যান বানিয়েছেন তারটা আগে শোনো, তারপর তাকে ফাইনাল করা গেলে করো, আর যদি সংযোজন করতে হয়, তবে তারও রূপরেখা বানাও, তারপর সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করে সার্ভিসেরও বানাও এবং যোগেরও। এই দুটি ঠিকই জরুরী। সেসব বানিয়ে তবে প্ল্যানটির বিষয়ে ফাইনাল করো যে তাতে কি করা হবে আর কি করা হবে না। যারা মনে করে যে এই সেবাটি জরুরী তারা প্ল্যান বানিয়ে আগে তাকে পাস করাও তারপর বাকিটা আউট করো।
(দাদীরা বাপদাদার সাথে মিলিত হতে এসেছেন)
বাবা তোমার তো প্রথম সার্ভিসও তোমারই। কেননা বাবার তো শখ-ই হল সেবা। সেবার দিকেই আগে অ্যাটেনশান যায়। সেইজন্য সেবার করতে হবে আর তার সাথে সাথে এই যে সব সেবা রয়েছে, সেসবও বাড়াতে হবে। বাবা একদিকে বলেন বাড়াও, অন্যদিকে বলেন এত বাড়িয়ে ফেলো না যে সামলাতে না পারো। আগে সিস্টেমটাকে ঠিক করো। সিস্টেম ঠিক হয়ে গেলে পরে অটোমেটিক্যালি সব বিভাগই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এটা যেন খেয়াল থাকে যে এক একটি ডিপার্টমেন্টের কোনটা রাখতে হবে আর কোনটা বাদ দিতে হবে বা কাট করতে হবে। সেটাও আগে ফাইনাল করতে হবে।
বিদেশের বড় দিদিদের সাথে : - সকলেই এসেছেন। তো সকলেই একসাথে বসে আছেন। আপনারা আপনাদের প্ল্যান বানিয়েছেন ? (এখন বানাবো) আগে প্ল্যান বানাও তারপর বাপদাদা দেখবেন যেখানে কি করা যেতে পারে। আর এই সেবাকাজে যে যত সময় দিয়েছেন, ততটাই সময়ও বের করতে হবে। কেননা সেসব রিপিট তো করতে হবে ! তাতেও বেশী করে এটাই লক্ষ্য রাখো যে যেগুলি প্রধান, সেগুলি আগে উল্লেখ করে দাও তাহলে রিপিটেশন হবে না। যেসব সার্ভিসেবল বাচ্চারা, যারা সার্ভিসের বিষয় চিন্তা ভাবনা করে, তারা এসেছেও সার্ভিসের প্ল্যানের জন্য। তো যত বেশী সার্ভিসের ওপরে অ্যাটেনশান দেবে ততই সার্ভিসের লাভ নিতে পারবে। নিজেদের মধ্যে বসে নবীনত্ব আনো। আর যা সব কিছু হচ্ছে সেগুলিকে ঠিক করো আর নবীনত্ব আনো।
জার্মানিতে রিট্রিস সেন্টার হবে, সুদেশ দিদি তার নকশা বাপদাদাকে দেখাচ্ছেন : - সবাই আগে দেখো তারপর ফাইনাল করো।
(নিউইয়র্কের মোহিনী দিদি সকলের স্মরণ আর ভালোবাসা জানালেন, মোহিনী দিদি ৭৫ বছর পূর্ণ হবে, বাপদাদা ওনাকে মালা পরিয়ে দিলেন।)
ব্যাঙ্গালোরের সরলা দিদি(অনেক পুরোনো দিদি) বাপদাদাকে পুষ্প স্তবক দিলেন : - শরীর ঠিক আছে। খুব ভালো।