০৪-০৮-২০২০ প্রাতঃ মুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
*প্রশ্নঃ -বুদ্ধিমান বাচ্চারা কোন্ রহস্যকে বুঝে অন্যদেরও ঠিক মতো করে বোঝাতে পারে ?*
*উত্তরঃ -ব্রহ্মা কে ? আর তিনি ব্রহ্মা তথা বিষ্ণু কিভাবে হন । প্রজাপিতা ব্রহ্মা এখানে আছেন, তিনি কোনো দেবতা নন । ব্রহ্মাই ব্রাহ্মণদের দ্বারা জ্ঞান যজ্ঞ রচনা করেছেন । এই সমস্ত রহস্য বুদ্ধিমান বাচ্চারাই বুঝে অন্যদেরও বোঝাতে পারে । ঘোড়সওয়ার আর পেয়াদা তো এতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যাবে ।*
*গীতঃ-ওম্ নমঃ শিবায়...* Audio Player*ওম্ শান্তি ।* ভক্তিমার্গেও সেই এক-এর মহিমা করা হয় । মহিমা তো গাওয়া হয়, তাই না, কিন্তু না তাঁকে জানে, না তাঁর যথার্থ পরিচয় জানে । যদি যথার্থ মহিমা জানতো তাহলে অবশ্যই বর্ণনা করতো । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, উঁচুর থেকেও উঁচু হলেন ভগবান । মুখ্য চিত্র হলো তাঁরই । ব্রহ্মার সন্তান তো থাকবে, তাই না । তোমরা সবাই হলে ব্রাহ্মণ । ব্রহ্মাকেও ব্রাহ্মণরাই জানবে, আর কেউই জানে না, তাই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় । ইনি কিভাবে ব্রহ্মা হতে পারে । ব্রহ্মাকে তো সূক্ষ্ম বতনবাসী দেখানো হয়েছে । এখন প্রজাপিতা তো সূক্ষ্ম বতনে থাকতে পারেন না । ওখানে তো কোনো রচনা হয় না । এই নিয়ে তোমাদের সঙ্গে অনেক বাদ - বিবাদও করে । ওদের বোঝা উচিত যে - ব্রহ্মা আর ব্রাহ্মণ আছে, তাই সঠিক, তাই না । ক্রাইস্ট থেকে যেমন খ্রীস্টান শব্দটি এসেছে । বুদ্ধ থেকে বৌদ্ধ আবার ইব্রাহিম থেকে ইসলামী । তেমনই প্রজাপিতা ব্রহ্মার থেকে ব্রাহ্মণরা হলো প্রসিদ্ধ । আদি দেব হলেন ব্রহ্মা । বাস্তবে ব্রহ্মাকে দেবতা বলতে পারো না । এও ভুল । যারা নিজেদের ব্রাহ্মণ বলে পরিচয় দেয়, তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত যে, ব্রহ্মা কোথা থেকে এলেন ? তিনি কার রচনা ? ব্রহ্মাকে কে সৃষ্টি করেছেন ? একথা কেউই বলতে পারবে না, জানেই না । এও তোমরাই জানো যে -- শিববাবার যে রথ, যাতে তিনি প্রবেশ করেন । ইনি হলেনই সেই আত্মা, যিনি কৃষ্ণ প্রিন্স হয়েছিলেন । ৮৪ জন্মের পরে ইনিই আবার ব্রহ্মা হন । জন্মপত্রীর নাম তো এনার আলাদাই হবে, কেননা ইনি তো মনুষ্য, তাই না । তারপর এনার মধ্যে যখন বাবা প্রবেশ করেন, তখন ব্রহ্মা নাম রেখে দেন । এও বাচ্চারা জানে যে ---ওই ব্রহ্মাই হলো বিষ্ণুর রূপ । নারায়ণ তো তৈরী হন, তাই না । ৮৪ জন্মের অন্তিমে তো সাধারণ রথ হবেন, তাই না । এই শরীর হলো সমস্ত আত্মাদের রথ । অকাল মূর্তির চলন্ত আসন, এখানে বসেই তিনি বলেন । শিখরা আবার একে আসন (তখ্ত ) বানিয়ে দিয়েছে । একে অকালতখ্ত বলা হয় । এ তো সবই অকালতখ্ত । আত্মারা সব অকালমূর্ত । উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবানের এই রথ তো চাই, তাই না । এই রথে প্রবেশ করে তিনি এই জ্ঞান দেন । তাঁকেই নলেজফুল বলা হয় । তিনি রচনার আদি, মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান দেন । নলেজফুলের অর্থ কোনো অন্তর্যামী বা 'জানি জাননহার' নয় । সর্বব্যাপীর অর্থ আলাদা, 'জানি জানানহারের' অর্থ আলাদা । মানুষ তো সবকিছু মিলিয়ে যা মনে হয় তাই বলে দেয় । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, আমরা সব ব্রাহ্মণরাই ব্রহ্মার সন্তান । আমাদের কুল সবথেকে উচ্চ । ওরা তো দেবতাদের উচ্চ রাখে, কেননা সত্যযুগ আদিতে দেবতারা ছিলেন । প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান ব্রাহ্মণ হয় -- একথা বাচ্চারা, তোমরা ছাড়া আর কেউই জানে না । তারা কিভাবে জানবে ? যেখানে তারা ব্রহ্মাকে সূক্ষ্ম বতনে মনে করে । ওর কুলজাত ব্রাহ্মণ, যারা পুজো করে, তারা আলাদা, তারা ভোজের নিমন্ত্রণ খায় । তোমরা তো আর ভোজের নিমন্ত্রণ ইত্যাদি খাও না । ব্রহ্মার রহস্য এখন খুব ভালোভাবে বোঝাতে হয় । তোমরা বলো যে, অন্য সব বিষয় ত্যাগ করে, বাবা, যার থেকে পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে, প্রথমে তো তাঁকে স্মরণ করো । তারপর এইসব বিষয়ও বুঝে যাবে । অল্পকিছুতে সংশয় এলেই তখন বাবাকে ছেড়ে দেয় । প্রথম মুখ্য কথা হলো অল্ফ (আল্লাহ ) আর বে (বাদশাহী )। বাবা বলেন যে আমাকে (মামেকম ) স্মরণ করো । আমি তো অবশ্যই কারোর মধ্যে আসবো, তাই না । তাঁর নামও তো থাকা উচিত । আমি এসে তাঁকে রচনা করি । ব্রহ্মার জন্য তোমাদের বোঝানোর জন্য অনেক বুদ্ধির প্রয়োজন । পেয়াদা, ঘোড়সওয়ার তো দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় । অবস্থা অনুসারে তো বোঝানো হয়, তাই না । প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো এখানেই আছে । ব্রাহ্মণের দ্বারা জ্ঞান যজ্ঞের রচনা করেন, তাই ব্রাহ্মণ তো অবশ্যই চাই, তাই না । প্রজাপিতা ব্রহ্মাও তো এখানেই প্রয়োজন, যার দ্বারা ব্রাহ্মণ তৈরী হতে পারে । ব্রাহ্মণরা তো বলে যে, আমরা ব্রহ্মার সন্তান । তারা মনে করে, আমাদের কুল পরম্পরা ধরে চলে আসছে, কিন্তু ব্রহ্মা কবে ছিলো, তা কেউই জানে না । এখন তোমরা হলে ব্রাহ্মণ । ব্রাহ্মণ তারাই, যারা ব্রহ্মার সন্তান । ওরা তো বাবার কর্তব্য সম্বন্ধে জানেই না । ভারতে প্রথমে ব্রাহ্মণরাই থাকে । ব্রাহ্মণদের হলো উঁচুর থেকেও উঁচু কুল । ওই ব্রাহ্মণরাও মনে করে যে, আমাদের কুল অবশ্যই ব্রহ্মার থেকেই এসেছে, কিন্তু তা কিভাবে এবং কখন -- তা বর্ণনা করতে পারে না । তোমরা জানো যে, প্রজাপিতা ব্রহ্মাই ব্রাহ্মণদের রচনা করেন । যেই ব্রাহ্মণদেরই পুনরায় দেবতা হতে হবে । বাবা এসেই ব্রাহ্মণদের পড়ান । ব্রাহ্মণদের রাজত্বকাল নেই । ব্রাহ্মণদের হলো কুল, রাজত্ব তখনই বলা হবে, যখন রাজা - রানী হবে, যেমন সূর্যবংশী রাজত্বকাল । তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের মধ্যে তো আর রাজা হয় না । ওরা যে বলে যে, কৌরব আর পাণ্ডবদের রাজ্য ছিলো, দুইই ভুল । এই দুইয়েরই তো কোনো রাজত্ব থাকে না । প্রজার প্রজার উপর রাজত্ব, তাদের রাজধানী বলা হবে না । মুকুট তো নেই । বাবা বুঝিয়েছেন যে - প্রথমে ডবল মুকুট ভারতেই ছিলো, তারপর সিঙ্গেল মুকুট । এই সময় তো কোনো মুকুটই নেই । এও খুব ভালোভাবে প্রমাণ দিয়ে বলতে হবে, যারা সম্পূর্ণ সুন্দর ধারণার হবে, তারা খুব ভালোভাবে বোঝাতে পারবে । ব্রহ্মার সম্বন্ধেই খুব বেশী করে বোঝাতে হয় । বিষ্ণুকেও কেউ জানে না । এও বোঝাতে হয় । বৈকুণ্ঠকে বিষ্ণুপুরী বলা হয়, অর্থাৎ সেখানে লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজ্য ছিলো । কৃষ্ণ প্রিন্স হলে তো বলবে, তাই না যে -- আমার বাবা রাজা ছিল । এমন নয় যে, কৃষ্ণের বাবা রাজা ছিলেন না । কৃষ্ণকে প্রিন্স বলা হয়, তাহলে অবশ্যই তাঁর রাজ পরিবারে জন্ম হয়েছিলো । বিত্তবানের ঘরে জন্ম হলে তাঁকে তো প্রিন্স বলবেই না । রাজার পদ আর বিত্তবানের পদের মধ্যে রাত - দিনের তফাৎ হয়ে যায় । কৃষ্ণের বাবা যে রাজা, তার অত নাম নেই । কৃষ্ণের কতো নাম । বাবার উচ্চ পদ বলা হবে না । সেই পদ হলো সেকেণ্ড ক্লাসের পদ, যিনি কৃষ্ণকে জন্ম দেওয়ার নিমিত্ত হন । এমন নয় যে কৃষ্ণের আত্মার থেকেও তিনি বেশী পড়েছেন । তা নয় । কৃষ্ণই আবার নারায়ণ হন । বাকি বাবার নাম লুপ্ত হয়ে যায় । তিনিও অবশ্যই ব্রাহ্মণ কিন্তু পড়াতে কৃষ্ণের থেকে কম । কৃষ্ণের আত্মা তাঁর বাবার থেকে উচ্চ পড়া পড়েছিলেন, তাই তো তাঁর নামের এতো মহিমা হয় । কৃষ্ণের বাবা কে ছিলেন - একথা কেউই জানে না । এরপরে জানতে পারবে । এখান থেকেই তো তাঁকে তৈরী হতে হবে । রাধারও তো মা - বাবা থাকবেন, তাই না, কিন্তু তাঁদের থেকে রাধার নামের মহিমা বেশী। কারণ মা - বাবা কম পড়েছিলেন । রাধার নাম তাঁদের থেকে উচ্চ হয়ে যায় । এ হলো বাচ্চাদের বোঝানোর জন্য সম্পূর্ণ কথা । সমস্তকিছুই এই পড়ার উপর নির্ভর করে । ব্রহ্মার সম্বন্ধেও বোঝানোর মতো বুদ্ধি চাই । তিনিই হলেন কৃষ্ণ, যাঁর আত্মা ৮৪ জন্ম ভোগ করে । তোমরাও ৮৪ জন্মগ্রহণ করো । সবাই তো আর একসঙ্গে আসবে না । যারা এই পড়ায় প্রথমের দিকে থাকে, তারাই প্রথমে আসবে । নম্বরের ক্রমানুসারে তো আসে, তাই না । এ অতি সূক্ষ্ম কথা । কম বুদ্ধির যারা, তারা তো ধারণা করতেই পারে না । নম্বরের ক্রমানুসারে তারা যায় । তোমরা নম্বরের ক্রমানুসারে ট্রান্সফার হয়ে যাও । যারা পরের দিকে যাবে, তাদের কতো বড় লাইন । নম্বরের ক্রম অনুযায়ী সবাই নিজের নিজের স্থানে গিয়ে নিবাস করবে । সকলের স্থানই নিদিষ্ট আছে । এ অনেক বড় আশ্চর্যজনক খেলা, কিন্তু তা কেউই বোঝে না । একে বলা হয় কাঁটার জঙ্গল । এখানে সবাই একে অপরকে দুঃখ দিতেই থাকে । ওখানে তো স্বাভাবিক ভাবেই সুখ থাকে । এখানে তো নকল সুখ । প্রকৃত সুখ এক বাবাই দেন । এখানে হলো কাক বিষ্ঠার সমান সুখ । এখানে দিনে দিনে মানুষ তমোপ্রধান হয়ে যায় । এখানে কতো দুঃখ । বলতে থাকে - বাবা, মায়ার তুফান অনেক আসে । মায়া বিদ্ধস্ত করে দেয়, অনেক দুঃখের অনুভব হয় । সুখদাতা বাবার বাচ্চা হয়েও যদি দুঃখের অনুভব হয়, তখন বাবা বলেন - বাচ্চারা, এ তোমাদের অনেক বড় কর্মের ভোগ । বাবাকে যখন পেয়েছো তখন দুঃখের ফিলিং আসা উচিত নয় । যে পুরানো কর্মভোগ আছে, তা যোগবলের দ্বারা শোধ করো । যদি যোগবল না থাকে তাহলে আছাড় খেয়ে শোধ করতে হবে । সাজা খেয়ে পদ পাওয়া তো ভালো কথা নয় । তোমাদের পুরুষার্থ করা উচিত না হলে বিচার সভা বসবে । প্রজা তো অনেকই হবে । এ তো ড্রামা অনুসারে সকলে গর্ভজেলে অনেক সাজা ভোগ করে । আত্মারা অনেক বিভ্রান্ত হতে থাকে । কোনো - কোনো আত্মা অনেক ক্ষতি করে -- যখন কারোর মধ্যে অশুদ্ধ আত্মার প্রবেশ হয়, তখন কতো হয়রান হয় । নতুন দুনিয়াতে এমন কথা হয় না । এখন তোমরা নতুন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করো । ওখানে গিয়ে তোমাদের নতুন নতুন মহল বানাতে হবে । তোমরা রাজার ঘরে জন্মগ্রহণ করো, যেমন কৃষ্ণ রাজার ঘরে জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু এতো মহল ইত্যাদি প্রথম থেকে থাকেই না । ও তো পরে বানাতে হয় । কে রচনা করে - যার কাছে জন্ম নেয় । এমন গায়নও আছে যে - রাজার ঘরে জন্ম হয় । কি হবে, তা তো পরের দিকে দেখতে হবে । এখন তো বাবা বলবেনই না । সে তো তাহলে নকল নাটক হয়ে যাবে, তাই তিনি কিছুই বলেন না । ড্রামাতে এই বলে দেওয়ার কথা লিপিবদ্ধ নেই । বাবা বলেন যে, আমিও পার্টধারী । ভবিষ্যতের কথা যদি পূর্ব থেকেই জানতাম, তাহলে অনেক কিছুই বলে দিতাম । বাবা অন্তর্যামী হলে প্রথম থেকেই বলে দিতেন । বাবা বলেন যে -- এই ড্রামাতে যা কিছু হয়, তা সাক্ষী হয়ে দেখতে থাকো, আর এর সঙ্গে সঙ্গে স্মরণের যাত্রায় মস্ত থাকো । এতেই ফেল করে যায় । জ্ঞান কখনোই কমবেশী হয় না । এই স্মরণের যাত্রাই কখনো কম, কখনো আবার বেশী হয় । জ্ঞান তো যা পেয়েছো, তাই আছে । এই স্মরণের যাত্রায় কখনো উৎসাহ থাকে, কখনো আবার ঢিলেমি এসে যায় । যাত্রা নীচ - উপর হতে থাকে । জ্ঞানে তো তোমরা সিঁড়িতে চড়ে যাও না । জ্ঞানের যাত্রা বলা হয় না । যাত্রা হলো স্মরণের । বাবা বলেন যে, স্মরণে থাকলে তোমরা সেফটি থাকবে । দেহ অভিমানে আসলে তোমরা ধোকা খেয়ে যাও । বিকর্ম করে দাও । কাম হলো মহাশত্রু । এতে ফেল হয়ে যায় । ক্রোধ আদি সম্বন্ধে বাবা এতো কথা বলেন না । জ্ঞানে তো হলো এক সেকেণ্ডে জীবনমুক্তি, না হলে বলে যে, সাগরকে কালি বানাও তাও এই জ্ঞান সম্পূর্ণ করা যাবে না । না হলে বলে, কেবল অল্ফকে স্মরণ করো । স্মরণ করা কাকে বলা হয়, এ তো জানেই না । কেবল বলতে থাকে, কলিযুগ থেকে আমাদের সত্যযুগে নিয়ে চলো । পুরানো দুনিয়াতে কেবল দুঃখ আছে । তোমরা দেখো যে বর্ষাকালে কতো বাড়ী ভেঙ্গে পড়ে যায়, কতো বাড়ী ডুবে যায় । বর্ষা ইত্যাদি এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও হবে । এইসব হঠাৎই হতে থাকবে । *মানুষ এখন কুম্ভকর্ণের নিদ্রায় নিদ্রিত আছে । বিনাশের সময় এলে তখন আর কি করতে পারবে । তখন সব মারা যাবে । এই ধরিত্রীও খুব জোরে দুলতে থাকবে । ঝড়, বর্ষা ইত্যাদি সব হয় । বম্বও ফেলে, কিন্তু এখানে অতিরিক্ত হলো সিভিলওয়ার....রক্তের নদী বইবে এমন বলা আছে । এখানে মহামারী হয় । একে অপরের উপর কেস করতে থাকে । তাই অবশ্যই এরা লড়াই করবে ।* এখানে সবাই নির্ধন, তোমরা হলে ধনীর ( বাবার ) । তোমাদের কোনো লড়াই আদি করতে হবে না । ব্রাহ্মণ হওয়াতে তোমরা ধনীর (বাবার ) হয়ে গেছো । ধনী বাবাকে বা পতিকে বলা হয় । শিববাবা তো হলেন পতির পতি । বিয়ের আশীর্বাদ হয়ে গেলে তখন বলে, আমরা এমন পতির সঙ্গে কবে মিলিত হবো ? আত্মারা বলে - শিববাবা, আমাদের তো তোমার সঙ্গে বিয়ের আশীর্বাদ হয়ে গেছে । এখন আমরা তোমার সঙ্গে কিভাবে মিলিত হবো ? কেউ কেউ তো সত্যি কথা লেখে, আবার কেউ কেউ অনেক কথা লুকিয়ে রাখে । সত্যি কথা লেখে না যে, বাবা আমাদের দ্বারা এই ভুল হয়ে গেছে । ক্ষমা করো । কেউ যদি বিকারে পড়ে যায়, তাহলে তার বুদ্ধিতে ধারণা হতে পারবে না । বাবা বলেন যে, তোমরা যদি এমন কড়া ভুল করো তাহলে চুরমার হয়ে যাবে । আমি তোমাদের সুন্দর (পবিত্র ) বানাতে এসেছি, তাহলে তোমরা কিভাবে মুখ কালো করো ? তাহলে তো তোমরা তখন স্বর্গে এলেও পাই - পয়সার পদ পাবে । এখন তো রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, তাই না । কেউ কেউ তো হেরে গিয়ে জন্ম - জন্মান্তরের জন্য পদভ্রষ্ট হয়ে যায় । তখন বাবা বলবেন, তোমরা বাবার কাছে এই পদ প্রাপ্ত করতে এসেছো, বাবা এতো উচ্চ হয়েছেন, তাহলে আমরা বাচ্চারা প্রজা হবোই না । বাবা সিংহাসনে বসবেন, আর বাচ্চারা দাস - দাসী হবে, এ কতো লজ্জার কথা । পরের দিকে তোমাদের সব সাক্ষাৎকার হবে । তখন অনেক অনুতাপ করবে । নাটক এমনই বানানো আছে, সন্ন্যাসীরাও যখন ব্রাহ্মচর্যতে থাকে তখন সমস্ত বিকারী মানুষ তাঁদের সামনে মাথা নত করে । পবিত্রতার অনেক মান । কারোর যদি ভাগ্যে না থাকে তাহলে বাবা পড়ালেও বারে বারে গাফিলতি বা ভুল করে ফেলে । বাবাকে স্মরণই করে না । অনেক বিকর্ম তৈরী হয়ে যায় । বাচ্চারা, তোমাদের উপর এখন বৃহস্পতির দশা । এর থেকে উঁচু দশা আর কিছুই হয় না । বাচ্চারা, তোমাদের উপর এই দশা চক্র লাগাতে থাকে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
*ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-*
*১ )* এই ড্রামার প্রতিটি সিন সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে, এক বাবার স্মরণে আনন্দে থাকতে হবে । স্মরণের যাত্রায় কখনো যেন উৎসাহ কম না হয় ।
*২ )* পড়াতে কখনো গাফিলতি ক'রো না, নিজের উচ্চ ভাগ্য বানানোর জন্য অবশ্যই পবিত্র হতে হবে । হেরে গিয়ে জন্ম - জন্মান্তরের জন্য পদভ্রষ্ট হয়ো না ।
*বরদানঃ-*"মন্মনাভবের" মহামন্ত্র দ্বারা সর্ব দুঃখ থেকে ঊর্ধ্বে থেকে সদা সুখ স্বরূপ ভব*
যখন কোনো প্রকারের দুঃখ আসবে, তখন মন্ত্র নিয়ে নাও, যাতে দুঃখ দূর হয়ে যায় । স্বপ্নেও যেন সামান্যতমও দুঃখের অনুভব না হয়। শরীর অসুস্থ হোক কিম্বা আর্থিক অবস্থা টালমাটাল হোক, যা কিছুই হোক না কেন, অন্তরে দুঃখের ঢেউ আসা উচিত নয় । সাগরে যেমন ঢেউ আসে আর চলে যায়, কিন্তু যারা সেই ঢেউয়ে সাঁতার কাটতে জানে, তারা তাতেই সুখের অনুভব করে। এই ঢেউয়ে ঝাঁপ দিয়ে এমনভাবে ভেঙ্গে দেয় যেন খেলা করছে । তাই তোমরা সাগরের সন্তান সুখ স্বরূপ, দুঃখের ঢেউ যেন তোমাদের না আসে ।
*স্লোগানঃ-*প্রতিটি সঙ্কল্পে দৃঢ়তার বিশেষত্বকে প্রত্যক্ষ ভাবে নিয়ে এসো, তাহলেই প্রত্যক্ষতা হয়ে যাবে ।*