18-01-18 RECORDED MURLI BENGALI : REVISE :18-01-18 Avyakt Murli
১৮-০১-১৮ ওম্ শান্তি "অব্যক্ত-বাপদাদা" মধুবন রেকর্ডেড : রিভাইস : ১৮-০১-০৮
*"সত্যিকারের স্নেহী হও, সব বোঝা বাবাকে দিয়ে মৌজের অনুভব করো, মেহনত মুক্ত হও"*
১৮-০১-১৮ ওম্ শান্তি "অব্যক্ত-বাপদাদা" মধুবন রেকর্ডেড : রিভাইস : ১৮-০১-০৮
*"সত্যিকারের স্নেহী হও, সব বোঝা বাবাকে দিয়ে মৌজের অনুভব করো, মেহনত মুক্ত হও"*
আজ বাপদাদা তাঁর চারিদিকের বেফিকর বাদশাহদের সংগঠনকে দেখছেন। এত বড় বাদশাহদের সভা সমগ্র কল্পে এই সঙ্গমের সময়েই হয়। স্বর্গেও এত বড় বড় সভা বাদশাহদের হবে না। কিন্তু এখন বাপদাদা সর্ব বাদশাহদের সভাকে দেখে পুলকিত হচ্ছেন। দূরে যারা রয়েছে তাদেরকেও হৃদয়ের কাছে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তোমরা সবাই নয়নে সমায়িত হয়ে রয়েছ, আর ওরা হৃদয়ে সমায়িত হয়ে রয়েছে। কত সুন্দর সভা সকলের চেহারায় আজকের বিশেষ দিবসে অব্যক্ত স্থিতির স্মৃতির ঝলক দেখা যাচ্ছে। সকলের হৃদয়ে ব্রহ্মা বাবার স্মৃতি সমায়িত হয়ে রয়েছে। আদিদেব ব্রহ্মা বাবা আর শিববাবা দু'জনই সকল বাচ্চাদেরকে দেখে পুলকিত হচ্ছেন।
আজ তো ভোর ২ টো থেকে শুরু করে বাপদাদার গলায় ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের মালা পড়েছিল। এই ফুলের মালা তো কমন, হীরের মালাও তেমন বড় কিছু নয়। কিন্তু স্নেহের অমূল্য মোতির মালা হল অতি শ্রেষ্ঠ। প্রতিটি বাচ্চার হৃদয়ে আজকের দিন স্নেহ বিশেষ ইমার্জ রয়েছে। বাপদাদার কাছে চার প্রকারের ভিন্ন ভিন্ন মালা ইমার্জ ছিল। প্রথম নম্বর হল শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের, যারা বাবা সমান হওয়ার শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থী বাচ্চা । এই রকম বাচ্চারা মালার রূপে বাবার গলায় মালা রূপে গ্রথিত ছিল। প্রথম মালাটি সব থেকে ছোট ছিল। দ্বিতীয় মালা - অন্তরের স্নেহ সমীপ সমান হওয়ার পুরুষার্থী বাচ্চাদের মালা । তারা হল শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থী, এরা পুরুষার্থী। তৃতীয় মালাটি ছিল - যেটা বড় ছিল, সেটাও ছিল স্নেহীদেরই ছিল, বাবার সেবায় সাথী, কিন্তু কখনো তীব্র পুরুষার্থী আবার কখনো, কখনও কখনও তুফানের সম্মুখীন বেশি করে। কিন্তু আশা রাখে তারা, সম্পন্ন হওয়ার আশাও ভালোই রাখে। চতুর্থ মালা ছিল অনুযোগকারীদের। ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের বাচ্চাদের মালা অব্যক্ত ফরিস্তা ফেসের (Face) এর রূপে মালা গুলো ছিল। বাপদাদাও ভিন্ন ভিন্ন মালা গুলিকে দেখে খুশিও হচ্ছিলেন এবং সাথে সাথে স্নেহ আর সকাশও দিচ্ছিলেন। এখন নিজেরা নিজেকে ভাবো, আমি কোন্ শ্রেণীর? কিন্তু চতুর্দিকের বাচ্চাদের মধ্যে বিশেষ সংকল্প বর্তমান সময়ে হৃদয়ে ইমার্জ রয়েছে যে এখন কিছু করতেই হবে। এই উৎসাহ উদ্দীপনা মেজরিটির মধ্যে সংকল্প রূপে রয়েছে। স্বরূপে নম্বর অনুসারে, কিন্তু সংকল্পে রয়েছে।
বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে আজকের স্নেহের দিন, স্মৃতির দিন, সমর্থীর দিন বিশেষ আন্তরিক আশীর্বাদ আর অন্তরের অভিনন্দন দিচ্ছেন। আজকের বিশেষ দিন স্নেহের হওয়ার কারণেই মেজরিটি স্নেহে ডুবে রয়েছে। এমনই পুরুষার্থে সদা স্নেহতে ডুবে থাকো, লাভলীন থাকো। তো সহজ সাধন হল স্নেহ, অন্তরের স্নেহ। বাবার পরিচয়ের স্মৃতি সহ স্নেহ। বাবার প্রাপ্তির স্নেহ সম্পন্ন স্নেহ। স্নেহ হল খুবই সহজ সাধন। কেননা স্নেহী আত্মা পরিশ্রম থেকে বেঁচে যায়। স্নেহে লীন হওয়ার ফলে, স্নেহে হারিয়ে যাওয়ার কারণে যে কোনো প্রকারের পরিশ্রমই মনোরঞ্জন রূপে অনুভূত হবে। স্নেহ স্বতঃই দেহের ভাব, দেহের সম্বন্ধের খেয়াল, দেহের দুনিয়ার খেয়াল থেকে উর্ধ্বে স্নেহে স্বতঃই লীন থাকে। হৃদয়ের স্নেহ বাবার সমীপতার, সাথের, সমানতার অনুভব করায়। স্নেহী সদা নিজেকে বাবার আশীর্বাদের পাত্র মনে করে। স্নেহ অসম্ভবকেও সহজেই সম্ভব করে দেয়। সদা নিজের ললাটে, মাথায় বাবার সহযোগের, স্নেহের হাত অনুভব করে। নিশ্চয় বুদ্ধি, নিশ্চিন্ত থাকে । তোমরা, আদি স্থাপনার সকল বাচ্চাদের আদি সময়ের অনুভব রয়েছে, এখনও সেবার আদি নিমিত্ত বাচ্চাদের অনুভব রয়েছে যে, আদিতে সব বাচ্চারা বাবাকে পেয়েছে, সেই স্মৃতি থেকে স্নেহের কতো নেশা ছিল! নলেজ তো পরে লাভ হয়, কিন্তু সর্ব প্রথম নেশাতে হারিয়ে যায়। বাবা হলেন স্নেহের সাগর, তো মেজরিটি বাচ্চা আদি থেকে সাগরে ডুবে রয়েছে । পুরুষার্থের গতি খুবই তীব্র স্পীডে চলছে। কিন্তু কিছু কিছু বাচ্চা স্নেহের সাগরে নিমজ্জিত থাকে, কেউ আবার ডুব দিয়েই উঠে পড়ে। সেইজন্য যত স্নেহে নিমজ্জিত বাচ্চাদের প্রিয়তে কম লাগে, অন্যদের ততটা নয় । কখনো মেহনত কখনো মহব্বত, দুটোতেই থাকে। কিন্তু যারা স্নেহে লাভলীন থাকে তারা সদা নিজেকে ছত্রছায়ার ভিতরে থাকার অনুভব করে। অন্তরের স্নেহী বাচ্চারা মেহনতকেও মহব্বতে বদলে নেয়। তাদের সামনে পাহাড় সমান সমস্যাও পাহাড় নয়, বরং তূলো সমান অনুভূত হয়, পাথরও জলবৎ অনুভূত হয়। তো আজ যেমন বিশেষ স্নেহের বায়ুমন্ডলে ছিলে তো অনুভব করেছ - যে মেহনত হল নাকি মনোরঞ্জন?
আজ তো সকলের স্নেহের অনুভব হয়েছে! তাই তো? স্নেহে হারিয়ে গিয়েছিলে? হারিয়ে গিয়েছিলে সবাই ? আজ মেহনতের অনুভব হয়েছে? কোনো বিষয়ে কি মেহনতের অনুভব হয়েছে? কি, কেন, কীভাবে? এই সবের সংকল্প এসেছে? স্নেহ সব ভুলিয়ে দেয়। তো বাপদাদা বলেন যে তোমরা সবাই বাপদাদাকে ভুলো না।স্নেহের সাগরকে পেয়েছ, খুব সাঁতার কাটো। যখনই কোনো মেহনতের অনুভব হয়, কেননা মায়া মাঝে মাঝে পেপার তো নেয়, কিন্তু সেই সময় স্নেহের অনুভবকে স্মরণ করো, তো মেহনত মহব্বতে বদলে যাবে। অনুভব করে তো দেখো। কী হয়? ভুলটা কী হয়ে যায়! সেই সময় কি কেন... এতেই বেশি চলে যাও। যেটা আসে সেটা চলেও যায়, কিন্তু যাবে কীভাবে? স্নেহকে স্মরণ করলে মেহনত চলে যাবে। কেননা সকলের বিভিন্ন সময়ে বাপদাদা উভয়ের স্নেহের অনুভব তো আছেই। আছে না? কখনো তো অনুভব করেছ! তাই না? চলো সব সময় না হলেও কখনো তো করেছ! সেই সময়কে স্মরণ করো - বাবার স্নেহ কী! বাবার স্নেহতে কী কী অনুভব করেছ? তো স্নেহের স্মৃতিতে মেহনত বদলে যাবে, কেননা বাপদাদার কোনো বাচ্চারই মেহনতের স্থিতি ভালো লাগে না। আমার বাচ্চারা, আর কিনা মেহনত? তো মেহনত থেকে কবে মুক্ত হবে? এই সঙ্গমযুগই হল সেই সময়, যাতে মেহনত মুক্ত, মৌজ আর মৌজে থাকতে পার। মৌজ নেই মানে কোনো না কোনো বোঝা বুদ্ধিতে রয়েছে। বাবা তো বলেছেন বোঝা আমাকে দিয়ে দাও, আমিত্ব ভাবকে ভুলে ট্রাস্টি হয়ে যাও। দায়িত্বভার বাবাকে দিয়ে দাও আর নিজে অন্তর থেকে সত্য, এমন বাচ্চা হয়ে খাও-দাও, খেলো, মৌজ করো । কেননা এই সঙ্গমযুগ হল সব যুগের মধ্যে মৌজের যুগ। এই মৌজের যুগেও যদি মৌজ না করো তবে কবে করবে? বাপদাদা যখন দেখেন বাচ্চারা বোঝা উঠিয়ে মেহনত করছে, বাবাকে দিচ্ছে না, নিজেরাই তুলছে, তো বাবার কি খারাপ লাগবে না! দয়া হবে না! মৌজের সময় মেহনত! স্নেহে হারিয়ে যাও, স্নেহের সময়কে স্মরণ করো । প্রত্যেকের কোনো না কোনো সময় বিশেষ স্নেহের অনুভূতি হয়, নিশ্চয়ই হয়েছে। বাবা জানেন হয়েছে। কিন্তু স্মরণ করো না। মেহনতকেই দেখতে থাকো, আর বিভ্রান্ত হতে থাকো। যদি আজকেও অমৃতবেলা থেকে এখন পর্যন্ত বাপদাদা, উভয় অথরিটির স্নেহের অনুভব করে থাকো, তো আজকের দিনেও স্মরণ করলে স্নেহের সামনে মেহনত সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
এখন বাপদাদা এই বছর প্রতিটি বাচ্চাকে স্নেহ যুক্ত, মেহনত মুক্ত দেখতে চান। মেহনতের নাম নিশানও যেন হৃদয়ে না থাকে, জীবনেও যেন না থাকে। সম্ভব? যারা মনে করো যে করতেই হবে, যারা সাহস দেখাতে চাও তারা হাত তোলো। আজ বিশেষ এমন প্রতিটি বাচ্চাকে বাবার বিশেষ বরদান হল - মেহনত মুক্ত হওয়ার। হওয়া যাবে? যাবে! তাহলে যদি কিছু হয়ে যায় তখন কী করবে? কী কেন করবে না তো? মহব্বতের সময়কে স্মরণ কোরো । অনুভবকে স্মরণ করবে আর অনুভবে হারিয়ে যাবে। এ হল তোমাদের প্রতিজ্ঞা । বাবাও বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন যে, তোমাদের সকলের প্রতিজ্ঞা হল যে আমরা বাবার দ্বারা ২১ জন্মের জন্য জীবনমুক্ত অবস্থার পদ প্রাপ্ত করছি, করবই, তো জীবনমুক্ত হতে মেহনত হয় কি? ২১ জন্মের মধ্যে এক জন্ম হল সঙ্গমের। তোমাদের প্রতিজ্ঞা হল ২১ জন্মের, ২০ জন্মের জন্য নয়। তো এখন থেকেই মেহনত থেকে মুক্ত অর্থাৎ জীবনমুক্ত, বেফিকর বাদশাহ্। এখনকার সংস্কার আত্মার মধ্যে ২১ ইমার্জ থাকবে। তো ২১ জন্মের উত্তরাধিকার নিয়েছ তো? নাকি এখনও নিতে হবে? তো অ্যাটেনশন প্লিজ, মেহনত মুক্ত, সন্তুষ্ট থাকবে এবং সন্তুষ্ট রাখবে। কেবল সন্তুষ্ট থাকা নয়, করতেও হবে। তবেই মেহনত মুক্ত থাকবে। নইলে রোজ বোঝা চাপার মতো বিষয়, মেহনতের বিষয়, কি বা কেন-র ভাষাতে চলে আসবে। এখন সময়ের সমীপতাকে দেখতে পাচ্ছ। সময় যত সমীপ হচ্ছে, তোমাদেরও বাবার সাথে সমীপতা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত, তাই না! বাবার সাথে তোমাদের সমীপতা সময়ের সমীপতাকে সমাপ্ত করবে। বাচ্চারা তোমরা আত্মাদের দুঃখ অশান্তির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছ না? তোমরাই তো পূর্বজ আবার পূজ্যও। তো হে পূর্বজ আত্মারা, হে পূজ্য আত্মারা, কবে বিশ্ব কল্যাণের কার্য সম্পন্ন করবে?
বাপদাদার কাছে সমাচার খুব ভালো ভালো আসে। সংকল্প খুব ভালো রয়েছে। স্বরূপে আসতে যথাশক্তি হয়ে যায়। এখন দুই মিনিটের জন্য সবাই পরমাত্ম স্নেহ সঙ্গমযুগের আত্মাদের মৌজের স্থিতিতে স্থিত হয়ে যাও । আচ্ছা এই অনুভবে বার বার প্রতিদিন সময়ে সময়ে অনুভব করতে থাকবে। স্নেহকে ত্যাগ করবে না। স্নেহে হারিয়ে যেতে শেখো। আচ্ছা।
ওম শান্তি